মারধরের পাশাপাশি গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দিত আমার মেয়েকে। এমন ভাষ্য একজন বাবার।

ঢাকায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতে গিয়ে গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রীর নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হয়েছে কুড়িগ্রাম শহরের টাপু নামা ভেলাকোপার মেয়ে কুলসুম (১০)। দুহাতে গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দেয়া হয়। এছাড়াও তার পশ্চাৎদেশ ও উরুতে মারের কালচে দাগ রয়েছে। গুরুতর আহত মেয়েটিকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ৬নং ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়া হলেও সাংবাদিকদের আগমনের খবরে শনিবার সকালে একটি প্রভাবশালী চক্র মেয়েটিকে সরিয়ে নেয়। সে টাপুনামা ভেলাকোপা গ্রামের দিনমজুর কবির হোসেনের কন্যা।

কুলসুমের বাবা কবির আলী জানান, সংসারে অভাবের কারণে প্রতিবেশী ফরিদ আলীর কথায় ঢাকায় গৃহকর্মীর কাজে মেয়েকে পাঠাই। মাধ্যম হিসেবে কুড়িগ্রাম শহরের কৃঞ্চপুর কামারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং কুড়িগ্রাম উত্তরা ব্যাংকের সহকারী অফিসার নুরন্নবীর বাসায় রেখে আসা হয়। গত ৯ মে কুলসুমকে ঢাকার মতিঝিল এলাকায় উত্তরা ব্যাংকের কর্পোরেট শাখার সিনিয়র অফিসার নুর আলমের মালিবাগের ভাড়া বাসায় পৌঁছে দেয় ফরিদ আলী।

প্রথম কয়েক দিন সেখানে ভালো কাটলেও এরপর থেকেই ব্যাংক কর্তা-গিন্নীর আসল রূপ বেরিয়ে আসে। পান থেকে চুন খসলেই মেয়েটির ওপর নেমে আসে অত্যাচারের খড়গ। ব্যাংক কর্মকর্তা নুর আলমের স্ত্রী সুমিও একজন ব্যাংক কর্মকর্তা। তার অত্যাচার ছিল নিষ্ঠুর রকমের। প্রচণ্ড মারধরের পাশাপাশি গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দিত সে। এতে গুরুতর আহত হলে ফরিদ আলীকে ঢাকায় ডেকে পাঠানো হয়।

পুলিশি ঝামেলা এড়াতে তার মাধ্যমেই অসুস্থ মেয়েটিকে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার বাসে কুড়িগ্রামে ফেরত পাঠানো হয়। এরপর চিকিৎসার জন্য শুক্রবার সকালে কুড়িগ্রাম হাসপাতালে কুলসুমকে ভর্তি করা হয়।

এ ব্যাপারে ব্যাংক কর্মকর্তা নুর আলম নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মেয়েটির মানসিক সমস্যা রয়েছে। সে নিজেই নিজের গায়ে ছ্যাঁকা দিয়ে আমাদের সুনাম নষ্ট করতে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

আপনার অভিমত