রংপুরের পীরগাছার চরাঞ্চলের শিশুরা শিক্ষা ও পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছে। চরাঞ্চলে প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও সচেতনতা বৃদ্ধিসহ শিক্ষক ও স্বাস্থ্যকর্মীর নিয়মিত পদচারণা না থাকায় তারা শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

জানা গেছে, উপজেলার তাম্বুলপুর ও ছাওলা ইউনিয়ন নদী ভাঙ্গন ও বন্যাদূর্গত এলাকা হিসেবে পরিচিত। ওই দুই ইউনিয়নের চর ছাওলা, চর তাম্বুলপুর, পাইকর জামা ও চর রহমতসহ একাধিক চরে শিক্ষা বিস্তারে ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চরাঞ্চলে শিক্ষা বিস্তার করতে পারছে না। অনুন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরদারীর অভাবে শিক্ষক ও স্বাস্থ্য কর্মীগণ নিয়মিত কর্মস্থলে যাচ্ছেন না। তাই চরাঞ্চলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। ফলে ২ ইউনিয়নের চরাঞ্চলে বসবাসকারী ১৮ হাজার পরিবারের শিশুরা শিক্ষা ও পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছে।

যাতায়াত ব্যবস্থার অনুন্নয়নের কারণে চরাঞ্চলের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকগণ যোগদান করতে ইচ্ছা পোষণ করেন না। তাদের উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে যোগদানের নির্দেশ দেয়া হয়। ফলে শিক্ষকগণ অনিয়মিত বিদ্যালয়ে যাতায়াতসহ বদলীর জন্য তদবির নিয়ে বেশী ব্যাস্ত থাকেন। চরাঞ্চলে দারিদ্রতা ও সচেতনতার অভাব অত্যন্ত বেশী। এ কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থী ঝরে পড়া বৃদ্ধি পেয়েছে। চরাঞ্চলের শিশুরা বিদ্যালয়ে যাওয়ার পরিবর্তে মাছ ধরা ও কৃষি কাজসহ পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে সহযোগীতা করছে। দরিদ্র ও অসচেতন পরিবারগুলো তাই তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে উৎসাহ দেখাচ্ছে না।

চর তাম্বুলপুর গ্রামের আমজাদ আলী, আমির উদ্দিন ও সাহেব আলীসহ অনেকে জানান, চরের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকরা যোগদান করতে না চাওয়ায় প্রায় শিক্ষক শূন্য থাকে। ফলে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা ভেস্তে যেতে বসেছে।

চর ছাওলা গ্রামের সবুর উদ্দিন বলেন, শিক্ষক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা যাতায়াত ব্যবস্থা ভাল না হওয়ার কথা বলে নিয়মিত আসে না। তাই স্বাস্থ্য ও শিক্ষা কার্যক্রম দিন দিন নিম্নমূখী হচ্ছে।
চরাঞ্চলের সাধারণ মানুষ চরাঞ্চলে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার রফিক উজ জামান বলেন, চরাঞ্চলের শিশুদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আনতে অভিভাবকদের সঙ্গে সভা সেমিনার করা হচ্ছে। অভিভাবকদের সচেতনতার অভাবে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চরাঞ্চলের শিশুরা।

***ইত্তেফাক

আপনার অভিমত