ফেনীর মহিপালে রেল ওভারপাস নির্মাণকাজের জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বেশ কিছুদিন ধরে চলে আসা দুঃসহ যানজট আর দুর্ভোগ আরো কমপক্ষে ২৫ দিনের জন্য বাড়ছে। রোববার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিষয়টি জানিয়েছেন। এদিকে চলমান যানজটের নিরসন চেয়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আজ সোমবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাস না চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। একই সঙ্গে যানজট পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ রাখারও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। রোববার দুপুরে আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাস মালিক সমিতি এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন যৌথভাবে এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। এতে সমর্থন জানিয়েছে আন্তঃজেলা মালামাল পরিবহন ট্রাক ও কভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি।

কয়েকদিনে এই মহাসড়কের যানজট ফেনীর ফতেপুর ছাড়িয়ে কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে গিয়ে ঠেকেছে। পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টার রাস্তা পেরুতে লাগছে ১৫-১৭ ঘণ্টা। যানজটের কারণে গন্তব্যের পথ পরিবর্তন করে উল্টোপথে ফিরে আসার ঘটনাও ঘটছে। আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কফিল উদ্দিন বলেন, ‘এ ধরনের যানজট চলতে থাকলে তা আগামী রোজা ও ঈদে আরো চরম আকার ধারণ করবে।’

আন্তঃজেলা মালামাল পরিবহন ট্রাক ও কভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দীন মোহাম্মদ বলেন, ‘কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম আসতে আমার ১৪ ঘণ্টা লেগেছে। তাও ঘুরপথে অলিগলি দিয়ে।’ চট্টগ্রাম পরিবহন ব্যবসায়ী মালিক সমিতির নেতা নুরুল আবছার বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন। যেকোনো মূল্যে এ মহাসড়কের যানজট নিরসন করতে হবে।’

চট্টগ্রাম আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মৃণাল চৌধুরী রোববার বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘চারদিন ধরে মহাসড়কে যে ভয়াবহ যানজট চলছে তাতে সেখানে গাড়ি চালানোর অবস্থা নেই। আমি আগেই দাবি জানিয়েছিলাম, ফেনীর ফতেপুরে নির্মাণাধীন ওভারপাসের পাশে দুটি পৃথক বিকল্প সড়ক তৈরি করে যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করার। একই সঙ্গে টোল প্লাজাগুলোয় পণ্যবাহী ও অন্যান্য যানবাহন একই সিরিয়ালে না রেখে আলাদাভাবে টোল নেওয়ার দাবিও জানিয়েছিলাম আমরা।’

 

অভিযোগ রয়েছে, ওভারপাস নির্মাণের বিষয়টি বিবেচনায় যানজট নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এমনকি যানজটের কারণ চিহ্নিত করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সওজ অধিদফতরকে যেসব নির্দেশনা দিয়েছিল সেগুলোও মানা হয়নি।

আপনার অভিমত