রংপুর: ঈদ আসতে আর বেশি দেরি নেই। ব্যস্ততা বেড়ে গেছে ইতোমধ্যেই।কামারের দোকানগুলোর টুংটাং শব্দই জানান দিচ্ছে ঈদ খুব কাছে। তাই দম ফেলার সময় নেই তাদের।

ব্যস্ততা বেড়ে গেছে বদরগঞ্জের কামারদের

 

রংপুরের বদরগঞ্জে ছোট বড় মিলে কমপক্ষে ১০০টি কামারের দোকান রয়েছে। কামারের দোকানগুলোতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সবখানেই তুমুল কর্মব্যস্ততার একই চিত্র।

কথা হয় কামারশিল্পের সাথে জড়িত প্রবীণ কর্মকার (কামার) সুধীর রায়ের(৮৫)সাথে। তিনি বললেন, ঈদকে সামনে রেখে আমার দোকানে কর্মব্যস্ততা অনেক গুণে বেড়ে গেছে। এ মুহুর্তে দম ফেলারও সময় নেই। পাইকারি ব্যবসার সাথে সাথে স্থানীয় ক্রেতাদের অসংখ্য অর্ডার রয়েছে আমার। বছরের এই সময়টাতে রোজগার বেশি হলেও অন্য সময়ে তুলনামূলকভাবে রোজগার কম হয়।

বললেন, মূলত, এটি আমাদের পূর্বপুরুষের পেশা। ব্রিটিশ আমলে আমার বাবা-দাদু কামারের কাজ করতো। তাদেরকে সহয়োগিতা করতেই একাজে আমার জড়িয়ে যাওয়া। আমার তিন সন্তানও এই ব্যবসার সাথে জড়িত।

‘ভাল লাগে এই ভেবে যে, আমার এ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে ৩০জন লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পেরেছি। তবে এ পেশাটি অত্যন্ত পরিশ্রমের। কর্মচারি ধনঞ্জন মোহন্ত(৪৭)বললেন, বছরের এই সময়টাতেই আমাদের কাজ অনেক বেড়ে যায়। কাজের উপরই নির্ভর করে এখানে পারিশ্রমিক পাওয়া যায়। যত কাজ তত আয়।

কর্মচারি ধীরেনচন্দ্র রায়(৪৯)বললেন, ঈদকে সামনে রেখে দম ফেলার সামান্য ফুরসতও নেই। কারণ এই সময়ের রোজগার দিয়েই সারাবছর চলতে হবে। বছরের বাকি দিনগুলোতে রোজগার অর্ধেকে নেমে আসবে।

লোহার তৈরি জিনিসপত্রের খুচরা ব্যবসায়ী তোছাদ্দেক হোসেন বলেন, বিশেষ করে ঈদের সময়টাতে সুধীর কামারের কাছ থেকে পাইকাড়ি দা,ছুরি,বটি,কোদাল,কুড়াল সহ নানা ধরনের মাল ক্রয় করে বাজারে বিক্রি করি। এতে আমার ব্যবসা ভালই হয়।

কামারপল্লীতে দা,বটি,ছুরি কিনতে আসা বদরগঞ্জ মহিলা ডিগ্রি কলেজের সিনিয়র প্রভাষক আঃ সালাম বললেন, সামনে কোরবানির ঈদ। কোরবানি করতে দা,বটি,ছুরির প্রয়োজন হয়। একারণে এগুলো কিনতে এসেছি। তবে বরাবরের তুলনায় এবার এসব জিনিসের দাম একটু বেশি মনে হল।

বদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান সাইদুল ইসলাম বলেন, ঈদকে সামনে রেখে কামারপল্লী এখন মুখর। দা,বটি,কোদাল,ছুরিসহ নানা ধরনের জিনিসপত্র কামারেরা তৈরি করে থাকেন। আসলে এটি একটি শিল্প। দেশীয় এই শিল্পটি যাতে টিকে থাকে এজন্য আমাদের সবার সহযোগিতা করা উচিত।

আপনার অভিমত