লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় শ্বশুরবাড়ির জমির ভাগ না পেয়ে বোনদের নিয়ে স্ত্রীর হাত-পা বেঁধে মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছেন স্বামী।

এ ঘটনায় থানা পুলিশ নির্যাতিত গৃহবধূর স্বামী ও তার এক ননদকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের উত্তর হলদীবাড়ি গ্রামের মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে বাবলু মিয়া ও তার বড় বোন মহিরন নেছা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। এর আগে বুধবার সকালে সিন্দুর্না ইউনিয়নের উত্তর হলদীবাড়ি গ্রামে এক নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ যুগান্তরকে জানান, ১০ শতক জমি রেখে তার বাবা ঝুল্লু মিয়া গত বছর মারা যান। সেখান থেকে তার ভাগের মাত্র দেড় শতক জমি বিক্রি করে টাকা দিতে না পারায় স্বামী তাকে মারধর শুরু করেন।

একপর্যায়ে বুধবার সকালে বাবলু তার দুই বোন মহিরন ও আমেনাকে ডেকে নিয়ে ঘরের মধ্যে শাহানারা হাত-পা বেঁধে ফেলেন। এ সময় তার গলায় ছুরি ধরে মেরে ফেলারও হুমকি দেন স্বামী বাবুল।

ঘটনার সময় তার অবুঝ শিশু শাহানুর এমন দৃশ্য দেখে কান্নাকাটি শুরু করলে তাকেও মারধর করা হয়। মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে শাহানারা তার চার সন্তানের জন্য বেঁচে থাকার আকুতি জানালে কিছুটা ক্ষান্ত হন স্বামী বাবলু। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে দোকান থেকে দুটি ব্লেড নিয়ে এসে বোন মহিরন ও আমেনার সহযোগিতায় গৃহবধূর মাথা ন্যাড়া করে দেন স্বামী বাবলু মিয়া। এরপর হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেয়া হলেও দিনভর ঘরেই বসে কান্নাকাটি করেন নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ।

পরে সন্ধ্যার দিকে তার স্বামী বাজারে যাওয়ার সুবাধে বাড়ির লোকজনের অগোচরে পালিয়ে এসে হাসপাতালে ভর্তি হন ওই গৃহবধূ। পরে তার দায়ের করা মামলায় বুধবার রাতেই স্বামী বাবলু মিয়া ও তার বড় বোন মহিরনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

ওই গৃহবধূর ভাই আবু বক্কর বলেন, এমন জঘন্য কাজের জন্য অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

সিন্দুর্না ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। কেউ অপরাধ করলে আইনানুযায়ী তার শাস্তি পাওয়া উচিত।

হাতীবান্ধা থানার ওসি ওমর ফারুক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে যুগান্তরকে বলেন, ‘এ ঘটনায় জড়িত স্বামী ও ননদকে গ্রেফতারের পর তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গৃহবধূর মাথা ন্যাড়া করে দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে। অন্য আসামিকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

আপনার অভিমত