মুসলিম ছেলের সঙ্গে বিয়ে, তরুণীর মাথা ন্যাড়া করল হিন্দু নেতারা
নীলফামারীতে মুসলিম ছেলের সঙ্গে প্রেম করায় লক্ষ্মী রানী রায় নামের এক তরুণীর মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।
মঙ্গলবার ভোরে নীলফামারী সদরের রামনগর ইউনিয়নের বিশমুড়ি চাঁদের হাট কলেজপাড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে।
তরুণীটি ওই এলাকার মৃত বীরেন্দ্র নাথ রায়ের মেয়ে।
জানা গেছে, গত পাঁচ বছর ধরে জেলা শহরের একটি পরচুলা কোম্পানিতে চাকরি করে। চাকরির সুবাদে রবিউল নামের এক অটোচালকের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
এরই প্রেক্ষিতে ২ জুলাই ওই তরুণী নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে রিনা বেগম নাম ধারণ করে দুই লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন রবিউল ইসলামের সঙ্গে। ওইদিন তারা দুইজনেই রবিউলের বাড়িতে চলে যায়।
রবিউল সদর উপজেলার কচুকাটা ইউনিয়নের দুহুলী গ্রামের আবদুস সাত্তারের ছেলে।
তরুণী জানায়, সোমবার রাতে তার গ্রামের কিছু মাতব্বররা ঘটনাটি জানতে পেরে, রবিউলের বাড়ি থেকে তাকে নিয়ে যায়। এরপর সালিশের মাধ্যমে মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সদানন্দ রায়, দীনবন্ধু রায়, পুষ্প কুমার রায় জোরপূর্বক তার মাথা ন্যাড়া করে দেয়। এতে প্রতিবাদ করলে তার পরিবারকে ও তাকে সমাজচ্যুত করার হুমকি দেয়।
লক্ষ্মীর মা বুলো বালা রায় বলেন, আমার দুই মেয়ে এক ছেলে। এর মধ্যে লক্ষ্মী রানী দ্বিতীয়। সে সংসারের একমাত্র ভরসা। একটু ভুলের কারণে আজ আমার মেয়েকে লাঞ্ছিত হতে হলো।
এ ব্যাপারে প্রতিবেশী সদানন্দ রায় ও দীনুবন্ধু রায় বলেন, আমরা লক্ষ্মী রানীকে শুদ্ধি করার জন্য ধর্মীয় শাস্ত্রমতে তার চুল ন্যাড়া করে সমাজের অন্তর্ভুক্তি করেছি। সে ধর্মান্তরিত হয়ে হিন্দু সম্প্রদায়কে কলঙ্কিত করেছে। আমরা তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে তার মাথার চুল ন্যাড়া করিনি। বরং সে আমাদের ধর্মের অবমাননা করেছে।
এ ব্যাপরে নীলফামারী শহরের শ্রী শ্রী আনন্দময়ী কালীমন্দিরের পুরোহিত আশোক কুমার ভট্টাচার্য বলেন, মাথা ন্যাড়া করে কাউকে শুদ্ধি করার বিধান নেই। তবে চুলের অগ্রভাগের সামান্য একটু চুল কেটে শুদ্ধি করা যেতে পারে। তবে তারা কাজটি ঠিক করেনি।
নীলফামারী সদর থানার ওসি বাবুল আকতার বলেন, এ ঘটনায় কোনো অভিযোগ পাইনি। তরুণী বা তার পরিবার লিখিত অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।