কুড়িগ্রামে নদীভাঙনে বিলীন হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম
কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তা নদীর পানি কমলেও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। ১৫ দিনের অব্যাহত ভাঙনে উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের প্রায় দুই শতাধিক বসতবাড়িসহ ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
জানা গেছে, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদীবেষ্টিত উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টি ইউনিয়ন নদীভাঙনের কবলে পড়েছে। এর মধ্যে থেতরাই ইউনিয়নের ৫১টি পরিবার, গুনাইগাছ ইউনিয়নের ২০টি পরিবার, বজরা ইউনিয়নের ৪৬টি পরিবার ও হাতিয়া ইউনিয়নের ৮১ পরিবারসহ দুই শতাধিক বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
অবিরাম ভাঙনের মুখে ঘরবাড়ি সরাতে হিমশিম খাচ্ছে ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষজন। ভাঙনে গৃহহারা মানুষজন খাদ্য ও আবাসিক সংকটে পড়েছেন। ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে গুনাইগাছ ইউনিয়নে কোটি টাকা ব্যয়ে সদ্য নির্মিত নাগড়াকুড়া টি বাঁধসহ ৫টি গ্রাম ও ১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ২টি মন্দির।
থেতরাই ইউনিয়নের হোকডাঙ্গা গ্রামের নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, গত বছর থেকে এসব এলাকায় ভাঙন শুরু হলেও কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় চলতি বছর ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।
থেতরাই ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার জানান, ওই এলাকায় প্রতি বছর নদী ভাঙছে ভাঙনরোধে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আবেদন করা হয়েছে। কার্যকর ব্যবস্থা নিলে নদীভাঙন রোধ সম্ভব হবে।
গুনাইগাছ ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ খোকা জানান, শুকনো মৌসুমে নাগড়াকুড়া এলাকায় টি’বাঁধের নিকটবর্তী এলাকা থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত টি বাঁধটি হুমকির সম্মুখীন। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য ইউনিয়ন প্রতি ১ টন করে চাল সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে ভাঙন রোধের ব্যবস্থার জন্য জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যে ভাঙনকবলিত এলাকায় টি’বাঁধ নির্মাণের প্রস্তাব কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করেছেন।