রংপুরে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ
রংপুর মহানগরীর পান্ডারদিঘি ধাপ কামারপাড়ায় পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়াকে ধর্ষণ করেছে মিন্টু রায় (৩২) নামের দুই সন্তানের বাবা। এঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী থানা ঘেরাও করে বিচার দাবি করেছে।
পুলিশ ঘটনাটি সালিশ বৈঠকের নামে ধামাচাপা দিয়ে ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগে দুই জনকে আটক করেছে। মামলায় আসামি করা হয়েছে ধর্ষক মিন্টু, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা হারাধন রায়সহ চারজনকে। রংপুর মেট্রোপলিট পুলিশের কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল ইসলাম জানান, নগরীর ৪ নং ওয়ার্ডের ধাপকামারপাড়ার দিন মজুর শাহজান মিয়াকে একই এলাকার ঝড়ু রায়ের ছেলে ২ সন্তানের জনক মিন্টু গত ১৫ এপ্রিল দুপুরে জমিতে ঘাস কর্তনের জন্য শ্রমিক হিসেবে নেয়। শাহাজাহান জমিতে ঘাস কর্তন করতে থাকলে মিন্টু রায় শাহজাহানের বাড়িতে আসে এবং তার রুমে ঢুকে টিভি দেখারত অবস্থায় থাকা তার ৫ম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণ করে। এসময় শিশুটি চিৎকার করলে প্রতিবেশী আকতারা বানু ছুটে আসলে ধর্ষক মিন্টু রায় তড়িঘড়ি করে পালিয়ে যায়। এসময় শিশুটির মা জায়েদা বেগম অন্যের বাড়িতে কাজ করতে গিয়েছিলেন।
ওসি জানান, কাজ শেষে বাড়িতে এসে মেয়ে এবং প্রতিবেশীর মুখে শুনে ধর্ষণের ঘটনার জন্য পুলিশের কাছে যেতে চান শাহজাহান মিয়া। কিন্তু ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রংপুর সিটি করপোরেশনের আওয়ামী কাউন্সিলর পরিষদের সাধারণ সম্পাদক, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক হারাধন রায় হারা মিমাংসার দায়িত্ব নিয়ে কালক্ষেপণ করতে থাকে। গত বুধবার রাতে মা জায়েদা বেগম বাদী হয়ে মিন্টু রায়, ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারাধন হারা, ধর্ষকের শ্যালক সম্ভূ রায়, টেংকু রায় ও মেহেদুল ইসলামকে আসামী করে মামলা করেছেন।
ওসি জানান, ধর্ষণের ঘটনার ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে ধর্ষককে সহযোগিতার অভিযোগে ধর্ষকের শ্যালক সম্ভূ রায়, টেংকু রায় ও মেহেদুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ধর্ষক ও কাউন্সিলরকে গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে। মেয়েটিকে উদ্ধার করে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছিল। পরে বৃহস্পতিবার রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালের ফরেনসিক বিভাগে তার ফরেনসিক পরীক্ষা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ধর্ষিতা শিশুর পিতা শাহজাহান মিয়া জানান, মিন্টু তার জমিতে আমাকে ঘাস কাটার কাজে লাগিয়ে আমারই বাড়িতে ঢুকে আমার মেয়েকে ধর্ষণ করলো। এখন আবার আমাকেই মামলা তুলে নেয়ার জন্য কাউন্সিলর হারাধন, ধর্ষক মিন্টুর শ্যালক সম্ভু ও টেংকু রায় চাপাচাপি করছে। হুমকি দিচ্ছে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তিনি জানান, আমি ধর্ষককে গ্রেফতার করে ফাঁসি চাই। আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই।
এ ব্যাপারে রংপুর সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারাধন রায় জানান, ধর্ষণের ঘটনাটি ১৫ এপ্রিল ঘটেছে। দুই পক্ষই ১৬ এপ্রিল আমার কাছে এসেছিল। তখন আমি ছেলে পক্ষকে বলেছিলাম ছেলেকে হাজির করান, তারপর মিমাংসা। কিন্তু তারা আমাকে মামলাতে জড়িয়েছে। এটা ঠিক নয়।
এদিকে এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী। বুধবার রাতে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মেট্রোপলিটন পুলিশের পরশুরাম থানায় ঘেরাও করে রাখে। এক পর্যায়ে এলাকাটি কোতয়ালী থানার অন্তর্ভূক্ত হওয়ার কারণে এলাকাবাসি কোতয়ালী থানায় আসলে পুলিশ মামলা রেকর্ড করে সহযোগিদের আটক করে।